গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকার জনসাধারণ।
সোমবার ১০ অক্টোবর সকালে উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার ফালু পালোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হয় এ মানববন্ধ। অভিযুক্ত শিক্ষক বাবুল সিকদার বিদ্যালয়ের ক্রিড়া শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। মানববন্ধনে স্কুলের সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থী সহ এলাকার সচেতন লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী আশা আক্তার বলেন, আমরা স্কুলে নিরাপত্তা চাই, কোন শিক্ষার্থী যেন শিক্ষকের লালসার শিকার না হয়। আমরা বাবুল শিকদারের বিচার চাই।
১০ম শ্রেণীর ছাত্রী সুলতানা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা স্কুলে এসে যদি নিরাপদেই না থাকি তাহলে আমাদের অভিভাবক কি করে আমাদের স্কুলে পাঠাবেন। শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থী ধর্ষণ বন্ধ না হলে অভিভাবকরা আমাদের নিশ্চিন্তে কিভাবে স্কুলে আসতে দেবেন। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষক বাবুল শিকদারের বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সেতু বলেন, আমরা অন্যায়ের বিচার চাই, একজন শিক্ষকের জন্য একটা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হতে পারে না। অভিযুক্ত শিক্ষকের উপযুক্ত বিচারের জন্য আমরা ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এর মাধ্যমে তার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেই ব্যবস্থা করবো।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিম বলেন, আমরা সকল শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। অভিযুক্ত শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাতটার দিকে ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে স্কুলের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় ওই শিক্ষকের বাড়ির সামনে পৌঁছালে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় বাড়ি ফাঁকা থাকায় তাকে ঘরের ভেতরে নিয়ে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হত্যার ভয়ভীতিও দেখায়। এমনকি পরিবারকে খুন করবে বলেও হুমকি দেয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের চাপে সে ঘটনাটি পরিবারকে জানান। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় গ্রাম্য সালিশের আশ্বাস দিয়েও এর কোন সোরাহা হয়নি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে শিক্ষকের বিচারের দাবি জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে ওই ছাত্রী ও ভুক্তভোগী পরিবার কালিয়াকৈর থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করেন।